Ticker

6/recent/ticker-posts

Ad Code

রাসূলুল্লাহ-স.এর সকাল-সন্ধ্যার দু'আ ও যিকির


 

রাসূলুল্লাহ-এর সকাল-সন্ধ্যার দু'আ ও যিকির 


                              (ভূমিকা)


মহান আল্লাহর অশেষ অনুগ্রহে রাসূলুল্লাহ-এর সকাল-সন্ধ্যার দু'আ ও যিকির পুস্তিকাটির দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হতে যাচ্ছে, আলহামদু লিল্লাহ। এই পুস্তিকায় বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত সকাল-সন্ধ্যার বিভিন্ন দু'আ ও যিকর সংকলনের চেষ্টা করেছি। কিছু কিছু দু'আ বা যিক্র ব্যাপকভাবে পরিচিত হওয়া সত্ত্বেও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে মুহাদ্দিসগণের বিস্তর আপত্তি থাকায় সেগুলো এখানে আনা হয়নি। যেসব দু'আর বিশুদ্ধতা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে, সেসবের মধ্যে শুদ্ধতার পাল্লা ভারি- এমন কিছু দু'আ এখানে উল্লেখ করেছি।


কোন ভাষার যথার্থ উচ্চারণ অন্য ভাষার অক্ষর দিয়ে সম্ভব নয়; বরং সেক্ষেত্রে বিকৃতির আশংকাই বেশি থাকে। যাদের সরাসরি আরবী পড়তে কষ্ট হয় তাদের নিছক সহায়তার জন্য বাংলা উচ্চারণ দিয়েছি। সুতরাং বাংলা উচ্চারণের ওপর নির্ভর না করে মূল আরবী উচ্চারণ শিখে নেওয়ার অনুরোধ থাকল। আরবী বর্ণ এবং ৭ বুঝানোর জন্য উর্ধ্ব কমা (১) এবং মাদ বোঝানোর জন্য (-) ব্যবহার করা হয়েছে।


মাসনুন দু'আ ও যিকিরের ক্ষেত্রে অনেক সময় বর্ণনাভেদে দুয়েকটি শব্দ বা বাক্যে কিছুটা ভিন্নতা দেখা যায়; যদিও মূলভাষ্য প্রায় একই থাকে। সুতরাং এক সংকলনের সাথে অন্য সংকলনে সামান্য ভিন্নতায় কোনটিকে ভুল মনে করা আবশ্যক নয়। আমি প্রতিটি দু'আ মূলগ্রন্থ থেকে নির্বাচন করেছি। তারপরও কোন ভুল-ব্যত্যয় আমাদের গোচরে আনলে পরবর্তী সংস্করণে সংশোধন করে নেবো ইনশা-আল্লাহ।

টীকার ক্ষেত্রে 'শামেলা' বলতে 'মাকতাবায়ে শামেলা' বোঝানো হয়েছে। আর ই.ফা. বলতে 'ইসলামী ফাউন্ডেশন' বোঝানো হয়েছে। আর_______________

যিকর শব্দের অর্থ স্মরণ বা উল্লেখ-আলোচনা। মুমিনের সকল নেক কাজই যেহেতু মহান আল্লাহর প্রতি মনোনিবেশ এবং তাঁর স্মরণ, সেজন্য সকল নেক কাজই মূলত যিকির । কুরআন-হাদীসে যিকিরকে এমন ব্যাপকার্থে উল্লেখ করা হয়েছে। তথাপি যেসব ইবাদত একান্ত আল্লাহর স্মরণার্থেই করা হয় এবং যেগুলোকে বিশেষভাবে যিকির নামেই অভিহিত করা হয়েছে- সচরাচর যিক্র বলতে সেসব মৌখিক ইবাদতকেই বোঝানো হয়। এখানে আমরা যিক্র বলতে সেটাকেই বোঝাব।

যিকির হল আল্লাহর নৈকট্য লাভের অদ্বিতীয় উপায়। মুসনাদে আহমাদের এক বর্ণনায় যিক্রকে সর্বোত্তম আমল বলে অভিহিত করা হয়েছে। কুরআনে একাধিক জায়গায় যে আমলটি অধিক পরিমাণে করতে বলা হয়েছে তা হল আল্লাহর যিক্র। যিকির আত্মার খোরাক, শয়তানের কুমন্ত্রণা প্রতিরোধের কার্যকর হাতিয়ার, বিপদাপদ থেকে রক্ষা ও দুশ্চিন্তা দূর করার উপায় এবং অল্প সময়ে বিপুল সাওয়াব ও মুমিন জীবনে সৌভাগ্যের সোপান। সহীহ মুসলিমে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ বলেছেন, মুফাররিদগণ অগ্রগামী হয়ে গেছেন। মুফাররিদ কারা? জানতে চাওয়া হলে জবাবে তিনি বলেছেন, যেসব নারী ও পুরুষ অধিক পরিমাণে আল্লাহর যিকর করেন।

             যিকর ও দু'আর সর্বোত্তম সময়

দু'আ ও আযকার মুমিন জীবনের অন্যতম জরুরি আমল হওয়ার কারণে সর্বদাই তা পালনীয়। যিক্র ও দু'আর কোনো নিষিদ্ধ সময় নেই বললেই চলে, বরং সর্বাবস্থায় আল্লাহর স্মরণ করা যায়। আল্লাহর কাছে চাওয়ার জন্য রাতের শেষাংশ হলো সবচেয়ে আদর্শ সময়। আর নির্ধারিত দু'আ ও আযকারের সর্বোত্তম সময় হলো সকাল ও সন্ধ্যা।

মহান আল্লাহ তা'আলা সুরা আলে ইমরানের ৪১ নং আয়াতে বলেছেন:

‎‫وَاذْكُرْ رَبَّكَ كَثِيرًا وَسَبِّحْ بِالْعَشِيِّ وَالْإِبْكَارِ.‬‎

'অধিকহারে তোমার পালনকর্তাকে স্মরণ করবে। আর সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করবে।'


একই নির্দেশ সুরা রূমের ১৭ নং আয়াতে, সুরা আহযাবের ৪২ নং আয়াতে এবং সুরা গাফিরের (আল মু'মিন) ৫৫ নং আয়াতেও উল্লেখ করা হয়েছে।


এ কারণে দিন ও রাতের যে কোনো সময়ের চেয়ে রাসূলুল্লাহ সকাল ও সন্ধ্যায় আল্লাহর যিক্র ও তাসবীহে বেশি মশগুল থাকতেন এবং আমাদেরকে সকাল-সন্ধ্যার মূল্যবান সময়ে আল্লাহর যিরে মশগুল থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন।

     সকাল-সন্ধ্যার দু'আ ও যিকরের সময়সীমা

এ বিষয়ে কুরআন ও হাদীসে সুস্পষ্ট করে কোনো সীমারেখা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি। সে কারণে উলামায়ে কিরামের বেশ কয়েকটি মতামত পাওয়া যায়। সকালের দু'আ ও যিক্রের সময়সীমার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বিশুদ্ধ মত হলো-সুবহে সাদিক থেকে নিয়ে সূর্য উদয় বা তার কিছু সময় পর পর্যন্ত। যদিও দ্বিপ্রহরের আগ পর্যন্ত এসব দু'আ ও যিকির করতে বাধা নেই। আর সন্ধ্যার আযকার ও দু'আর বিষয়ে দুটি অভিমত বেশি প্রসিদ্ধ। একটি হল আসরের পর থেকে মাগরিবের আগ পর্যন্ত। অপর মত হলো মাগরিবের পর থেকে রাতের এক তৃতীয়াংশ পর্যন্ত। প্রথম মতের উলামাদের বক্তব্য হল, সকাল ও সন্ধ্যায় আল্লাহর যিক্র ও তাসবীহ প্রসঙ্গে কুরআনে কারীমে الْعَشِي এবং الْأَصَالُ শব্দ প্রয়োগ করা হয়েছে, যার অর্থ হল দিনের শেষ ভাগ তথা আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়। সুতরাং সন্ধ্যার যিকির ও তাসবীহ পাঠের সময় হল আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত; অর্থাৎ বিকাল বেলা। এটি ইমাম ইবনে তাইমিয়্যা, ইবনুল কাইয়্যিম ও ইমাম নববী (রাহিমাহুমুল্লাহ)-এর মত।


দ্বিতীয় মতাবলম্বনকারীদের যুক্তি হল, সকাল-সন্ধ্যার দু'আর ক্ষেত্রে হাদীসে السَاء শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। আর বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত আবদুল্লাহ ইবনে আবী আওফা )রা.)-এর একটি মারফু হাদীস দ্বারা বোঝা যায় الْمَسَاء মাগরিব পরবর্তী সময়কে বলা হয়। সুতরাং সন্ধ্যার আযকার ও দু'আর সময় মাগরিবের পর। বিষয়টি যেহেতু গবেষণানির্ভর, সুতরাং আসরের পর থেকে নিয়ে মাগরিবের পরেও এ যিক্র ও দু'আয় সমস্যা নেই। আল্লাহই ভালো জানেন।

 অন্য কাজের ফাঁকে সকাল-সন্ধ্যার দু'আ ও তাসবীহ পড়া যাবে কি?

সুরা আলে ইমরানে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা সেসব লোকদের প্রশংসা করেছেন যারা আল্লাহর যিকির করেন দাঁড়িয়ে, বসে এবং শুয়ে অর্থাৎ সর্বাবস্থায়। এ ছাড়াও আয়িশা (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সর্বাবস্থায় যিক্র করতেন। সুতরাং মর্নিং ওয়াক বা অন্য কোনো কাজ করা অবস্থায়ও সকাল-সন্ধ্যার যিকির করা যাবে। তবে অন্য কোনো কাজে ব্যস্ত না থেকে কেবল যিকির ও তাসবীহ করা সন্দেহাতীতভাবে উত্তম। কেননা তাতে মনোযোগ বেশি থাকে এবং আল্লাহর যিকিরের প্রতি গুরুত্ব প্রকাশিত হয়।

      ওযু ছাড়া যিক্র করা ও তাসবীহ পড়ার বিধান


আলী (রা.) বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ গোসল ফরয হওয়ার সময় ব্যতীত অন্য সব অবস্থায় কুরআন তিলাওয়াত করতেন। এছাড়াও বুখারী ও মুসলিমেএকযোগে বর্ণিত, আয়িশা (রা.) বর্ণনা করেছেন, নবী সর্বাবস্থায় আল্লাহর যিক্র করতেন। সুতরাং ওযু না থাকলেও যিকির করা যাবে। অনেকে মনে করেন, মেয়েদের মাথায় কাপড় না থাকলে যিক্র বা দু'আ-দরূদ পড়া যাবে না; এটিও ভুল ধারণা। বরং এমতাবস্থায়ও দু'আ-দরূদ পড়তে বাধা নেই।


মাসিক ও নেফাস অবস্থায় সকাল-সন্ধ্যার দু'আ ও যিকির....................

মেয়েদের মাসিক ও প্রসব পরবর্তী স্রাব চলাকালীন অবস্থায় সকাল-সন্ধ্যার আমল এবং যে কোনো দু'আ ও যিকির করতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। এ ব্যাপারে ইমাম যুহরী (রাহ.)-কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তারা যিক্র করতে পারবেন। ইমাম ইবরাহীম নাখায়ী (রাহ.) বলেছেন, ঋতুবতী নারী ও যার ওপর গোসল ফরয হয়েছে তিনি আল্লাহর যিক্র করতে পারবেন।


দু'আ-দরূদ ও যিকিরের শুরুতে কি বিসমিল্লাহ বলতে হবে?

কুরআনে কারীমের কোনো সুরা বা আয়াত পাঠ ব্যতীত অন্য কোনো দু'আ বা যিকির ও তাসবীহের শুরুতে আ'উযুবিল্লাহ বা বিসমিল্লাহ পড়তে হবে না। সুতরাং সকাল-সন্ধ্যার আমল হিসেবে সুরা ইখলাস, ফালাক বা নাস পাঠের সময় বিসমিল্লাহ পাঠ করতে হবে। কিন্তু সাধারণ দু'আ ও যিকিরের পূর্বে বিসমিল্লাহ পাঠ করতে হবে না। ১ নং যিক্র: আয়াতুল কুরসী (সকাল-সন্ধ্যায় ১ বার)

‎‫اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ لَهُ مَا فِي السَّمَوَاتِ وَمَا فِي السَّمَوَاتِ وَمَا فِي السَّمَوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْ ذِي الْأَرْ يَشْفَعُ عِنْدَةً إِلَّا بِإِذْنِهِ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا عِنْدَةِ يُحِيطُونَ بِشَيْنَ بِمَا شَاءَ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاتِ وَ الْأَرْضَ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ ।‬‎


অর্থ: আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো হক ইলাহ্ নেই। তিনি চিরঞ্জীব, সর্বসত্তার ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না, নিদ্রাও নয়। আসমানসমূহে যা রয়েছে ও যমীনে যা রয়েছে সবই তাঁর। কে সে, যে তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর কাছে সুপারিশ করবে? তাদের সামনে ও পেছনে যা কিছু আছে তা তিনি জানেন। আর যা তিনি ইচ্ছে করেন তা ছাড়া তাঁর জ্ঞানের কোনো কিছুকেই তারা পরিবেষ্টন করতে পারে না। তাঁর 'কুরসী' আসমানসমূহ ও যমীনকে পরিব্যাপ্ত করে আছে; আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। আর তিনি সুউচ্চ সুমহান।'ফযীলত: কোনো ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় আয়াতুল কুরসী পাঠ করলে সারাদিন ও সারারাত জিনের আক্রমণ থেকে নিরাপত্তায় থাকবে। রাতে শোয়ার সময় পড়লে শয়তান নিকটবর্তী হবে না। পাঁচ ওয়াক্ত ফরয সালাতের পর পড়লে জান্নাত লাভে মৃত্যু ব্যতীত কোনো বাধা থাকবে না।


২) নং যিকির: ৩ স্কুল (সকাল-সন্ধ্যায় ৩ বার)

সুরা ইখলাস (কুল হুওয়াল্লাহু আ'হাদ), সুরা ফালাক্ব, সুরা নাস প্রত্যেকটি ৩ বার করে সকালে এবং ৩ বার করে সন্ধ্যায়।

ফযীলত: পাঠকারীর জন্য সব কিছুর ক্ষতি থেকে নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে।"

৩ নং যিকির (সকাল-সন্ধ্যায় ৭ বার)

‎‫حَسْبِيَ اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ، عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ.‬‎


উচ্চারণ: 'হাসবিয়াল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়া, 'আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া হুওয়া রাব্বুল 'আরশিল আযীম।

অর্থ: আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট, তিনি ছাড়া আর কোনো হক ইলাহ নেই। আমি তাঁর উপরই ভরসা করেছি। আর তিনি মহান আরশের রব।


ফযীলত: যে ব্যক্তি দু'আটি সকালে ৭ বার এবং সন্ধ্যায় ৭বার বলবে, তার দুনিয়া ও আখিরাতের সকল দুশ্চিন্তা ও উৎকণ্ঠার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট হবেন।


৪ নং যিকির: সায়্যিদুল ইস্তিগফার (সকাল-সন্ধ্যায় ১ বার)

‎‫اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ، خَلَقْتَنِي، وَأَنَا عَبْدُكَ، وَأَنَا عَبْدُكَ، وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِ اسْتَعَتْ مَكَ أَعُوْذُبِكَ مِنْ شَرِّمَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَى، وَأَبُوءُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي. فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ.‬‎


উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা আনতা রাব্বী, লা ইলা-হা ইল্লা আনতা, খালাক্বতানী, ওয়া আনা 'আবদুকা, ওয়া আনা 'আলা 'আহদিকা ওয়া ওয়া'দিকা মাস্তাত্বা'তু। আউযু বিকা মিন শাররি মা- সানা'তু, আবূউ লাকা বিনি'মাতিকা 'আলাইয়‍্যা, ওয়া আবূউ বিযাম্বী। ফাগফির লী ফাইন্নাহ্ লা-য়াগফিরুয যুনুবা ইল্লা- আনতা।অর্থ: হে আল্লাহ, আপনি আমার প্রতিপালক, আপনি ছাড়া কোন হক ইলাহ নেই। আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং আমি আপনার বান্দা। আর আমি আমার সাধ্যানুযায়ী আপনার (তাওহীদের) অঙ্গীকার ও (জান্নাতের) প্রতিশ্রুতির ওপর রয়েছি। আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাই। আমার প্রতি আপনার প্রদত্ত নিয়ামত স্বীকার করছি। আর আপনার কাছে আমার পাপকর্মেরও স্বীকারোক্তি দিচ্ছি। অতএব আপনি আমাকে মাফ করুন। নিশ্চয় আপনি ছাড়া আর কেউ গুনাহসমূহ মাফ করতে পারেনা।

ফযীলত: দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে সকাল এবং সন্ধ্যায় পাঠ করলে সেদিনে বা রাতে মারা গেলে নিশ্চিতভাবে জান্নাতী হবে।


৫ নং যিকির (সকাল-সন্ধ্যায় ৩ বার)

‎‫بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ ।‬‎


উচ্চারণ: বিস্মিল্লা-হিল্লাযী লা- ইয়াদুররু মা'আমিহী শাইউন ফিল্ আরদ্বি ওয়ালা- ফিস্ সামা-ই ওয়া হুওয়াস্ সামী'উল 'আলীম।অর্থ: শুরু করছি আল্লাহর নামে; যাঁর নামের সাথে আসমান এবং যমীনে কোনো কিছুই ক্ষতি করতে পারে না। আর তিনি সর্বশ্রোতা, মহাজ্ঞানী।

ফযীলত: যে ব্যক্তি প্রত্যহ সকাল ও সন্ধ্যায় এই দু'আ ৩ বার করে বলবে, কোনো কিছুই তার ক্ষতি করতে পারবে না।


৬ নং যিকির (সকাল-সন্ধ্যায় ১০ বার)


‎‫لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ‬‎


‎‫وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ।‬‎


উচ্চারণ: লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়া'হদাহু লা শারীকা লাহ্ লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল 'হামদু ওয়া হুওয়া 'আলা-কুল্লি শাই ইন ক্বাদীর।


অর্থ: একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো হক ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই, রাজত্ব তাঁরই, সমস্ত প্রশংসাও তাঁরই, আর তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।


ফযীলত: সকাল-সন্ধ্যায় ১০ বার বললে ১০টি করে নেকী, ১০টি করে গুনাহ মাফ এবং ১০টি মর্যাদা বৃদ্ধি করা হবে এবং ৪টি কৃতদাস মুক্ত করার সাওয়াব ও শয়তান থেকেমুক্তি নসীব হবে।১০ অথবা কষ্ট হলে একবার বলতে হবে।১১ এই যিক্র সকালে ১০০ বার বললে ১০টি কৃতদাস মুক্ত করার সাওয়াব পাবে, ১০০ নেকী পাবে, ১০০ গুনাহ মাফ হবে এবং সেদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত শয়তান থেকে নিরাপত্তা অর্জন হবে। আর ওই দিনে কেউ আর তার চেয়ে বেশি আমলকারী বলে গণ্য হবে না। তবে যে ব্যক্তি এর চেয়েও বেশি সংখ্যকবার পড়েছেন তার কথা ভিন্ন।


৭ নং যিকির (সকাল-সন্ধ্যায় ১ বার)


সকালে বলবে:-

‎‫اللَّهُمَّ بِكَ أَصْبَحْنَا، وَبِكَ أَمْسَيْنَا، وَبِكَ نَحْيَا، وَبِكَ نَمُوتُ، وَإِلَيْكَ النُّشُورُ.‬‎


উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা বিকা আসবানা, ওয়া বিকা আমসাইনা, ওয়াবিকা না'হয়া, ওয়াবিকা নামৃতু, ওয়া ইলাইকান নুশুর।


অর্থ: হে আল্লাহ, আমরা আপনার অনুগ্রহে সকালে উপনীত হয়েছি এবং আপনারই অনুগ্রহে আমরা সন্ধ্যায় উপনীত হয়েছি। আর আপনার করুণায় আমরা জীবিত থাকি, আপনার ইচ্ছায়ই আমরা মৃত্যুবরণ করব; আর আপনার কাছেই পুনরুত্থিত হব।

Post a Comment

3 Comments