**তোমার অপেক্ষায়**
এই গল্পটা আরও বেশি আবেগঘন এবং গভীর
রাতের নীরবতা ভেঙে ফোনের নোটিফিকেশনটা বেজে উঠলো। অরণ্য তাড়াতাড়ি স্ক্রিনে চোখ রাখলো। মেসেজটা অনন্যার –
**"ঘুমিয়েছো?"**
অরণ্যের ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠলো। সে জানতো, এই ‘ঘুমিয়েছো?’ মানে হলো—অনন্যা কথা বলতে চায়, হয়তো কিছু শেয়ার করতে চায়, কিংবা হয়তো শুধুই অরণ্যের সঙ্গ চাই।
**"না, তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম,"** অরণ্য রিপ্লাই দিলো।
ওপাশ থেকে কয়েক সেকেন্ড কোনো উত্তর আসলো না। তারপর অনন্যার মেসেজ এলো—
**"আমরা কি সত্যি একসাথে থাকবো?"**
এই প্রশ্নটা নতুন নয়, কিন্তু প্রতিবারই অরণ্য একটু থমকে যায়। তাদের ভালোবাসার গল্পটা সহজ ছিল না। ছয় বছর ধরে তারা একে অপরের হাত ধরে আছে, কিন্তু সমাজ, পরিবার—সব কিছু যেন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অরণ্য দীর্ঘশ্বাস ফেললো।
**"তুমি চাইলে, সব বাধা পেরিয়ে তোমার হাতটা ধরতে পারবো,"** সে লিখলো।
অনন্যার রিপ্লাই এল না অনেকক্ষণ। হয়তো সে ভাবছিল, হয়তো চোখের কোণে জমে থাকা জল মুছছিল। কিছুক্ষণ পর অনন্যার একটা ছবি এলো—পুরোনো একটা ব্রেসলেটের। এটা অরণ্যই একদিন ওকে উপহার দিয়েছিল, ওদের প্রথম দেখা হওয়ার দিনে।
**"আমি তো তোমারই, শুধু সময়ের অপেক্ষা,"** অনন্যা লিখলো।
অরণ্য হাসলো। ভালোবাসা মানেই তো অপেক্ষা। কিছু গল্পের শেষ পরিণতি সময়ই ঠিক করে দেয়।
তোমার অপেক্ষায় জান
রাত তখন গভীর। জানালার বাইরে শহরের বাতিগুলো নিস্তব্ধ রাস্তায় আলোর ছটা ছড়াচ্ছে। অরণ্য বিছানায় শুয়ে ছাদের দিকে তাকিয়ে ছিল। ঘুম আসছিল না। আসলে, ঘুমানোর ইচ্ছে ছিল না। কারণ সে জানতো, এই সময়টায় অনন্যা হয়তো মেসেজ করবে।
ঠিক তখনই ফোনের নোটিফিকেশনটা ভেসে উঠলো। অরণ্যের ঠোঁটে অদ্ভুত একটা হাসি খেলে গেল। মেসেজটা ঠিক যেমনটা সে ভেবেছিল—অনন্যার।
**"ঘুমিয়েছো?"**
অরণ্য দ্রুত টাইপ করলো, **"না, তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।"**
ওপাশ থেকে কয়েক সেকেন্ড কোনো উত্তর এল না। হয়তো অনন্যা ভাবছিল, হয়তো নিজের মনের কথা ঠিকভাবে গুছিয়ে নিতে চাইছিল। কিছুক্ষণ পর রিপ্লাই এলো—
**"আমরা কি সত্যি একসাথে থাকবো?"**
এই প্রশ্নটা নতুন নয়। তবু, প্রতিবার শুনলে অরণ্য একটু থমকে যায়। তাদের প্রেম সহজ ছিল না। সমাজ, পরিবার—সব কিছু যেন তাদের ভালোবাসার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ছয় বছর ধরে তারা একে অপরের সঙ্গে আছে, কিন্তু সম্পর্কটার একটা অনিশ্চয়তা সবসময়ই রয়ে গেছে।
অরণ্য জানে, অনন্যা প্রচণ্ড রকমের আবেগী। সে জানে, মেয়েটা অপেক্ষা করতে করতে কখনো কখনো ক্লান্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু তার ভালোবাসা এখনো অটুট। অরণ্য গভীর শ্বাস নিল, তারপর টাইপ করলো—
**"তুমি চাইলে, সব বাধা পেরিয়ে তোমার হাতটা ধরতে পারবো।"**
অনন্যা এবার বেশ কিছুক্ষণ চুপ। হয়তো ভাবছে, হয়তো চোখের কোণে জমে থাকা জল মুছছে। তারপর একটা ছবি পাঠালো—পুরোনো একটা ব্রেসলেটের। অরণ্য অবাক হলো। এটা তো সেই ব্রেসলেট, যেটা ও ছয় বছর আগে প্রথম দেখা হওয়ার দিনে অনন্যাকে উপহার দিয়েছিল।
অরণ্যের মনে পড়ে গেল সেই দিনটার কথা। তখন তারা কলেজে পড়ত। বসন্তের দুপুর ছিল, আকাশ ছিল মেঘলা। ক্যাম্পাসের গাছতলায় দাঁড়িয়ে অরণ্য একটু নার্ভাস হয়েই ব্রেসলেটটা অনন্যার হাতে পরিয়ে দিয়েছিল। অনন্যা হেসে বলেছিল, **"এটা কি শুধু বন্ধুত্বের জন্য?"**
অরণ্য সেদিন কোনো উত্তর দেয়নি, শুধু মেয়েটার হাতটা একটু শক্ত করে ধরেছিল।
আজ ছয় বছর পরও, সেই একই ব্রেসলেট ওর কাছে আছে। এতদিন পরও ওটা যত্ন করে রেখে দিয়েছে অনন্যা।
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে অরণ্য লিখলো, **"তুমি কি এখনো অপেক্ষা করছো?"**
অনন্যা সঙ্গে সঙ্গে রিপ্লাই দিলো, **"আমি তো তোমারই, শুধু সময়ের অপেক্ষা।"**
অরণ্য ফোনটা বুকের কাছে চেপে ধরলো। ভালোবাসা মানেই তো অপেক্ষা। কিছু গল্পের শেষ পরিণতি সময়ই ঠিক করে দেয়। হয়তো তাদের গল্পের শেষটাও সময়ই
শেষ
ট্যাগ ......
#শুধু তোমার অপেক্ষা
তোমার জন্য অপেক্ষা কবিতা
আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করছি
তোমার অপেক্ষায় গল্পের লিংক
তোমার অপেক্ষায় মিজানুর রহমান হৃদয়
0 Comments