Ticker

6/recent/ticker-posts

Ad Code

বুদ্ধিমান বালক ও বাদশাহ

 


**বুদ্ধিমান বালক ও বাদশাহ**  


একবার এক ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ তার রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে সফর করছিলেন। তিনি জানতে চাইলেন, তার শাসনে প্রজারা সুখে আছে কিনা। সফরের একপর্যায়ে তিনি একটি ছোট্ট গ্রামের পাশে বিশ্রাম নিতে বসলেন। সেখানে তিনি এক বুদ্ধিমান বালকের সাথে দেখা পেলেন।  


বাদশাহ বালককে জিজ্ঞেস করলেন, **"তুমি কি আল্লাহকে ভালোবাসো?"**  


বালক স্মিত হেসে বলল, **"হ্যাঁ, বাদশাহ! আমি আল্লাহকে আমার জীবন থেকেও বেশি ভালোবাসি।"**  


বাদশাহ আরেকটি প্রশ্ন করলেন, **"আল্লাহকে যদি তুমি দেখতে না পাও, তবে কিভাবে এত ভালোবাসো?"**  


বালক তখন সূর্যের দিকে ইশারা করে বলল, **"বাদশাহ, আপনি সূর্যের দিকে তাকাতে পারেন?"**  


বাদশাহ বললেন, **"না, সূর্যের আলো এত তীব্র যে আমি সরাসরি তাকাতে পারি না।"**  


বালক মৃদু হেসে বলল, **"যে আল্লাহ এই সূর্যকে সৃষ্টি করেছেন, তার জ্যোতি কত মহান হবে! তিনি দয়া করে আমাদের জন্য পৃথিবীতে এত সুন্দর কিছু রেখেছেন, যা দেখেই আমরা তাঁকে চিনতে পারি।"**  


বাদশাহ বালকের উত্তর শুনে অবাক হলেন এবং বললেন, **"তুমি খুবই বুদ্ধিমান! সত্যিই, যারা আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা করে, তারা তাঁর ভালোবাসা অনুভব করতে পারে।"** 



এই গল্প আমাদের শেখায় যে, আল্লাহর অস্তিত্ব ও ভালোবাসা বোঝার জন্য তাঁকে দেখতে হবে না, বরং তাঁর অসংখ্য সৃষ্টি দেখেই আমরা তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে পারি।


 **বুদ্ধিমান বালক ও বাদশাহর প্রশ্ন**  


অনেক দিন আগের কথা। একবার এক ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ তার রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে সফরে বের হলেন। তিনি দেখতে চাইলেন, তার শাসনে প্রজারা সুখে আছে কিনা, তারা ন্যায়বিচার পাচ্ছে কিনা। সফরের এক পর্যায়ে তিনি একটি ছোট্ট গ্রামের পাশে বিশ্রাম নিলেন।  


সেই গ্রামে প্রবেশের আগে তিনি একটি বটগাছের নিচে বসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলেন। তখনই তিনি দেখতে পেলেন, এক বালক পাশেই একটি খালের ধারে বসে খেলছে। তার চোখে কৌতূহল, চেহারায় বুদ্ধিমত্তার ছাপ। বাদশাহর মনে হলো, এই ছেলেটির সাথে কথা বলা উচিত।  


তিনি বালককে কাছে ডাকলেন এবং বললেন,  


**"তোমার নাম কী, ছোট্ট বন্ধু?"**  


বালক মাথা নিচু করে বিনয়ের সাথে বলল, **"আমার নাম আবদুল্লাহ।"**  


বাদশাহ হাসলেন, **"তুমি খুব সুন্দর নাম পেয়েছ। আচ্ছা বলো তো, তুমি আল্লাহকে ভালোবাসো?"**  


বালক চমৎকার হাসি দিয়ে বলল, **"হ্যাঁ, বাদশাহ! আমি আল্লাহকে আমার জীবন থেকেও বেশি ভালোবাসি।"**  


বাদশাহ এবার একটু কঠিন প্রশ্ন করলেন, **"আল্লাহকে যদি তুমি দেখতে না পাও, তাহলে কিভাবে তাঁকে এত ভালোবাসো?"**  


বালক তখন সূর্যের দিকে ইশারা করে বলল, **"বাদশাহ, আপনি সূর্যের দিকে সরাসরি তাকাতে পারেন?"**  


বাদশাহ বললেন, **"না, সূর্যের আলো এত তীব্র যে আমি সরাসরি তাকাতে পারি না।"**  


বালক মুচকি হেসে বলল, **"তাহলে আপনি কি বলবেন যে সূর্য নেই?"**  


বাদশাহ মৃদু হেসে বললেন, **"না, সূর্য অবশ্যই আছে, কারণ আমরা তার আলো ও উষ্ণতা অনুভব করতে পারি।"**  


বালক তখন বলল, **"ঠিক তেমনই, আমি আল্লাহকে দেখি না, কিন্তু তাঁর সৃষ্টি দেখি, তাঁর রহমত অনুভব করি। পৃথিবীর প্রতিটি সুন্দর জিনিস, প্রতিটি নিয়মিত ঘটনা—এই সবই তাঁর অস্তিত্বের প্রমাণ দেয়।"**  


বাদশাহ এবার আরেকটি প্রশ্ন করলেন, **"আচ্ছা, তুমি কি জানো, মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় সম্পদ কী?"**  


বালক এক মুহূর্ত চিন্তা করল, তারপর বলল, **"সবার মতে ধন-সম্পদ সবচেয়ে বড় সম্পদ। কিন্তু আমার মতে, সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ও জ্ঞান। কারণ, ধনসম্পদ মানুষকে ধোঁকায় ফেলে দিতে পারে, কিন্তু ঈমান ও জ্ঞান মানুষকে সঠিক পথ দেখায়।"**  


বাদশাহ বালকের প্রজ্ঞা দেখে অভিভূত হলেন। তিনি বালকের মাথায় হাত রেখে বললেন, **"তুমি সত্যিই অনেক বুদ্ধিমান, আল্লাহ তোমাকে জ্ঞান ও বরকত দান করুন।"**  


**আরও একটি প্রশ্ন**  

বাদশাহ কিছুক্ষণ চুপচাপ বালকের দিকে তাকিয়ে রইলেন। তারপর হঠাৎ জিজ্ঞাসা করলেন, **"আচ্ছা, যদি কেউ তোমার সব সম্পদ কেড়ে নেয়, তোমার গৃহদ্বার ধ্বংস করে দেয়, তোমার পরিবারকে কষ্ট দেয়—তাহলে তুমি কী করবে?"**  


বালক তখন মুচকি হেসে বলল, **"বাদশাহ, আমার সব কিছু কেড়ে নিলেও তারা আমার দুটি জিনিস কেড়ে নিতে পারবে না।"**  


বাদশাহ বিস্মিত হয়ে বললেন, **"কী সেই দুটি জিনিস?"**  


বালক বলল, **"আমার ঈমান এবং আমার ধৈর্য। ঈমান আমাকে আল্লাহর ওপর নির্ভর করতে শেখায়, আর ধৈর্য আমাকে সব বিপদে শক্ত থাকতে সাহায্য করে। যদি কেউ আমার ধন-সম্পদ কেড়ে নেয়, আল্লাহ চাইলে তিনি আমাকে তার চেয়েও বেশি কিছু দিতে পারেন। কিন্তু যদি আমি ঈমান ও ধৈর্য হারিয়ে ফেলি, তাহলে আমি সত্যিকারের গরিব হয়ে যাব।"**  


বাদশাহ এবার সম্পূর্ণ চুপ হয়ে গেলেন। তিনি অনুভব করলেন, এই ছোট্ট বালকের জ্ঞান ও বিশ্বাস অনেক বড় বড় পণ্ডিতদের থেকেও শক্তিশালী।  


তিনি বালকের মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, **"তুমি সত্যিই জ্ঞানী, আর আল্লাহ তোমাকে অনেক আশীর্বাদ দিয়েছেন। আমি আজ অনেক কিছু শিখলাম।"**  


 **উপদেশ ও শিক্ষা**  


এই গল্প আমাদের শেখায় যে,  


  • ১. **আল্লাহকে ভালোবাসতে হলে তাঁকে দেখার প্রয়োজন নেই**—তাঁর সৃষ্টি ও কুদরতি দিকগুলো দেখলেই আমরা তাঁর অস্তিত্ব অনুভব করতে পারি।  
  • 2. **সত্যিকারের সম্পদ হলো ঈমান ও জ্ঞান**—এগুলো ধনসম্পদের চেয়েও মূল্যবান।  
  • 3. **ধৈর্য এবং বিশ্বাস মানুষকে সব কঠিন সময় পার করতে সাহায্য করে**—বিপদে ধৈর্য ধরলে এবং আল্লাহর ওপর ভরসা রাখলে তিনি আমাদের সাহায্য করেন।  


এই গল্পটি আমাদের জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দেয়  !


Post a Comment

4 Comments